ঢাবির হলে পিটিয়ে হত্যা : প্রভোস্টসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাবির হলে পিটিয়ে হত্যা : প্রভোস্টসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন মোসা. আসমা আক্তার এ মামলা করেন। তবে এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলা থাকায় আপাতত এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। আগের মামলাটির তদন্ত সাপেক্ষে তোফাজ্জল পরিবারের করা মামলাটি সচল হবে। আইনজীবী নাজমুল হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন। 

তিনি জানান, আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগটি আমলে নিয়েছেন। যেহেতু এ ঘটনায় আগে দায়ের হওয়া মামলা চলমান, তাই এ মামলার তদন্ত আপাতত চলবে না। আগের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে এই আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা চলবে কি না তা পরে আদালত নির্ধারণ করবেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, মোত্তাকিন সাকিন শাহ, আল হোসাইন সাজ্জাদ, ওয়াজিবুল আলম, আহসান উল্লাহ, ফজলে রাব্বি, ইয়ামুস জামান, রাশেদ কামাল অনিক, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান ও মো. সুলতান। তারা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন তোফাজ্জল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান। মোবাইল চুরির অভিযোগ এনে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। পরে তিনি মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ান ছাত্ররা। এরপর তাকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন কিছু শিক্ষার্থী। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরদিন দুপুরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে অভিযুক্ত ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদের আদালতে হাজির করেন। এরপর আসামিরা স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

ওই ৬ শিক্ষার্থী হলেন ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ , জিওগ্রাফির আল হসাইন সাজ্জাদ ও ওয়াজিবুল আলম।

এনআর/জেডএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *