‘এ বছর খরচের টাকাই উঠবে না, রবি মৌসুমেও ধরা খামু’

‘এ বছর খরচের টাকাই উঠবে না, রবি মৌসুমেও ধরা খামু’

গত কয়েকদিন আগে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রোপণ করা অধিকাংশ ধানের চারা পচে গেছে। প্রথম দফা বৃষ্টিতে বীজতলা ডুবে যাওয়ায় এরপর কয়েক দফা বৃষ্টিতে পানি জমে ক্ষেতের ফসল পচতে শুরু করে। 

গত কয়েকদিন আগে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রোপণ করা অধিকাংশ ধানের চারা পচে গেছে। প্রথম দফা বৃষ্টিতে বীজতলা ডুবে যাওয়ায় এরপর কয়েক দফা বৃষ্টিতে পানি জমে ক্ষেতের ফসল পচতে শুরু করে। 

এ বছর মকবুল খাঁ ২০০ শতাংশ জমিতে আমনের আবাদ করেছেন আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কৃষক মকবুল খাঁ। টানা বর্ষণের কারণে আমনের ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বছর ১২০ টাকা দরে প্রতি কড়া জমি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিছি। ৭শ টাকা মজুরিতে শ্রমিক দিয়ে চারা রোপণ করাইছি। ২০০ শতাংশ জমিতে আমার প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হইছে। এ বছর খরচ টাকাই উঠবে না, রবি মৌসুমেও ধরা খামু হয়তো।

সাম্প্রতিক টানা বর্ষণের কারণে অধিকাংশ ধানের চারা এখন পানির নিচে থাকায় তা পঁচে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি। শুধু মকবুল খাঁই নয় ক্ষতির মুখে পড়েছেন পটুয়াখালীর অধিকাংশ কৃষক।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার কালিকাপুর, জৈনকাঠী, বড় বিঘাই ও মাদারবুনিয়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, টানা বর্ষণের কারণে আমনের বীজতলা একাধিবার নষ্ট হয়ে যাওয়াসহ জমিতে অতিরিক্ত পানির কারণে অনেকের জমিতে লাগানো ধানের চারা পচে গেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক জমিতেই একাধিকবার বীজ রোপণ করতে হয়েছে। অনেক কৃষককে জমিতে একাধিকবার যেমন সার প্রয়োগ করতে হচ্ছে তেমনি উচ্চ মূল্যে বীজ কেনায় কৃষককে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে কৃষকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চারা রোপণ শেষ করতে পারছেন না। এর ফলে ধানের ফলন ও আগামী রবি মওসুমের চাষাবাদ নিয়েও চুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠী ইউনিয়নের কৃষক মো. মামুন তালুকদার বলেন, বৃষ্টির অতিরিক্ত পানির কারণে আমনের বীজ সব পঁচে গেছে। দ্বিতীয় দফায় আবারও বীজ কইরা চারা রোপণ করাইছি, কিন্তু টানা বৃষ্টিতে রোপণ করা চারাগুলোও পঁচে গেছে। আমরা কৃষকরা খুব সমস্যায় আছি। গতবারের তুলনায় এবার খরচ অনেক বেশি। আমন ধানের চারা তো কোথাও নাই, ইরি ধানের প্রতি কেজি চারা কিনতে হচ্ছে ৫শ- ৬শ টাকায়। এ অঞ্চলের কৃষকরা এ বছর হয়তো লাভবান হইতে পারবে না। 

পটুয়াখালী সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক এলাকার খালগুলোর সঙ্গে নদীর সংযোগ না থাকায় এবং বিভিন্ন খালে বাঁধ দেওয়ার কারণে কৃষককের জমি থেকে বৃষ্টির পানি সহজে নেমে যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে বাঁধ অপসারণের পাশপাশি পানি ব্যবস্থাপনার সংস্কারে পরামর্শ দিয়েছনে এই কৃষি কর্মকর্তা।

এবার পটুয়াখালী জেলায় ১ লাখ ৯০ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীজতলা নষ্ট কিংবা বৃষ্টির কারণে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো সম্যা হবে না বলেও দাবি করছে কৃষি বিভাগ।

আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *