ডিম-মুরগির সিন্ডিকেট ধরতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম

ডিম-মুরগির সিন্ডিকেট ধরতে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম

দেশের বাজারে ডিম ও মুরগির সিন্ডিকেট ভাঙতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এরমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে প্রান্তিক পর্যায়ের সব খামার বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। 

দেশের বাজারে ডিম ও মুরগির সিন্ডিকেট ভাঙতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এরমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে প্রান্তিক পর্যায়ের সব খামার বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। 

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি সুমন হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকারের সই করা ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২-৩ বছর ধরে ডিম ও মুরগির বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর অন্যতম কারণ পোলট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তাদের শক্ত সিন্ডিকেটের কাছে সবাই ধরাশায়ী। এক্ষেত্রে বিগ লিডিং কোম্পানিগুলো হচ্ছে— কাজী ফার্মস পোলট্রি ফিড অ্যান্ড হ্যাচারি, পিপলস পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, আফতাব পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, প্যারাগন পোলট্রি ফিড অ্যান্ড হ্যাচারি, নারিশ পোলট্রি ফিড অ্যান্ড হ্যাচারি, নাহার পোলট্রি ফিড অ্যান্ড হ্যাচারি, সিপি বাংলাদেশ পোলট্রি ফিড অ্যান্ড হ্যাচারি ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ, বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনপ্রেডিয়েন্টস ইমপোর্টারস অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন, পোল্ট্রি প্রফেশনাল বাংলাদেশ। এসব সিন্ডিকেটকে ভাঙতে না পারলে বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে না।

অভিযোগ করা হচ্ছে, এসব কোম্পানির এক ব্যক্তিই সব অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। এরাই আবার সরকারের মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তরে মিটিং করেন এবং সরকারকে ভুল বুঝিয়ে ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। এই সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে ১ লাখ ৬০ হাজার প্রান্তিক খামারি থেকে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। আর প্রায় ১ লাখ খামার বন্ধ হওয়ার পথে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে দুই-তিন গুণ বেশি লাভের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।আমদানি বন্ধ থাকায় কোম্পানিগুলো মুরগির বাচ্চার উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে সংকট তৈরি করে। আর সুযোগ বুঝে বাড়তি দামে বিক্রি করে। অন্যদিকে পোলট্রি ফিডের দাম বাড়িয়ে ডিম-মুরগির উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ডিম মুরগির বাজারও অস্থির হয়ে যাচ্ছে।

চুক্তিবদ্ধ খামারে কর্পোরেট কোম্পানি বিশেষ সুযোগ দিচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, একই মুরগির বাচ্চা এবং পোল্ট্রি ফিড দুই রকম দামে কোম্পানি বিক্রি করছে। কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ খামারিরা থাকলে এক বস্তা পোল্ট্রি ফিডের ২৭০০ টাকায় এবং একটি মুরগির বাচ্চা দাম ৩৫-৩৮ টাকায় কিনতে পারছে। এর বিপরীতে প্রান্তিক খামারিদের জন্য এক বস্তা ফিডের দাম ৩৬০০ টাকা এবং একটি মুরগির বাচ্চার দাম রাখা হচ্ছে ৪০-১০০ টাকা। এরফলে চুক্তিবদ্ধ খামারে মুরগি উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় তারা লসের সম্মুখীন হচ্ছেন না, অন্যদিকে প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ন্যায্য মূল্য না পেয়ে উৎপাদন থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

এমন অবস্থায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির ব্যাপারে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। না হলে সারাদেশের প্রান্তিক খামারিদের নিয়ে বড় আন্দোলন করা হবেও বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরএইচটি/এসএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *