২০২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্য। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা জানান আমন্ত্রিত অতিথিরা।
২০২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্য। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা জানান আমন্ত্রিত অতিথিরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘মুক্ত করো ভয়’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।
আলোচনা সভা শেষে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের পরিবেশনায় গান, কবিতা, নাটক ও মূকাভিনয় পরিবেশিত হয়। এসময় জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের বিশেষ তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের এখন ভয় দূর হয়ে গেছে, তাই এখন সবার মনে সাহস ছড়িয়ে দিতে হবে। স্বৈরাচারের দোসররা যেকোনো সময় আমাদের উপর আবারও হানা দিতে পারে। তাই তাদের বিরুদ্ধে সবসময়ই সোচ্চার থাকতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমান বলেন, বিগত দিনে স্বাধীন চেতনায় বিশ্বাসীদের এই শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্টদের অত্যাচারে নিপীড়িত হয়েছিল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিটি ব্যক্তি। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের অনুপ্রেরণা। তাই শহীদদের চেতনাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। নাটক-চলচ্চিত্র এবং গানের মাধ্যমে আমাদের শহীদদের নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই বেঁচে থাকবে এই অভ্যুত্থান।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বহু মানুষের রক্তের ত্যাগের বিনিময়ে আজকে আমরা এখানে দাঁড়াতে পেরেছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আজীবন এটাই আমাদের চেতনা হওয়া উচিত। আমরা ভয়হীন সংস্কৃতি চর্চা চাই, যেখানে মানুষ নির্ভয়ে কথা বলতে পারবে। আমাদের যেকোনো আয়োজনে আপনারা এগিয়ে আসবেন, আপনাদের সাংস্কৃতিক আয়োজনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের বিচার প্রক্রিয়ার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে। জাতিসংঘের টিমের সঙ্গেও বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে আবৃত্তি শিল্পী ও গবেষক নাসিম আহমেদ বলেন, নতুন স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে, এরকম সাংস্কৃতিক বিকাশ পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনেক। আমাদের উপর হাজারো মানুষের রক্তের দায় রয়েছে। তারাই এই দেশকে নতুনভাবে নির্মাণ করেছে। তারা দেশকে নতুন করে সাজাতে আমাদের উপর দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। সবার প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে আমরা যেনো তাদের আকাঙ্ক্ষিত দেশ গঠন করতে পারি।
আবৃত্তিকার শারমিন ইসলাম জুইয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের নির্বাহী সদস্য এস এম বিপাশ আনোয়ার, স্মৃতিকথা তুলে ধরেন শহীদ গোলাম নাফিসের বাবা গোলাম রহমান এবং আহত বিপ্লবী ও ছাত্র সহ-সমন্বয়ক মো. তামজিদ আলম ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে সার্বিক পরিচালনা করেন বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্যের আহ্বায়ক আবৃত্তি শিল্পী মৃন্ময় মিজান।
কেএইচ/জেডএস