ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রান্তিক খামারিরা

ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রান্তিক খামারিরা

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেছেন, সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেওয়ার ফলে সারাদেশের প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উৎপাদন ব্যয় না কমিয়ে উল্টো বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ডিম ও মুরগি উৎপাদনে খরচ বেশি হলেও লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেছেন, সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেওয়ার ফলে সারাদেশের প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উৎপাদন ব্যয় না কমিয়ে উল্টো বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ডিম ও মুরগি উৎপাদনে খরচ বেশি হলেও লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ফিড ও বাচ্চার দাম নির্ধারণ না করে ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত সুফল বয়ে আনবে না। বরং এর ফলে বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়বে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরকারের পক্ষ থেকে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা পোস্টকে তিনি এসব কথা বলেন।

সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেন, এই দাম নির্ধারণে প্রান্তিক খামারিদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। বরং দেশের কর্পোরেট গ্রুপের মতামতের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কৃষি বিপণন ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে ডিম মুরগির দাম নির্ধারণ করে বলা হয়েছে, ডিম উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দরে বিক্রি করতে হবে। সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজি প্রতি ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে কেজি প্রতি ১৬৮ দশমিক ৯১ টাকা, পাইকারি ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কর্পোরেট গ্রুপদের একটি ডিমের উৎপাদনে খরচ হয় ৮ দশমিক ৪০ টাকা, ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ হয় ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা এবং ১ কেজি সোনালি মুরগির উৎপাদনে খরচ ২২০ টাকা। এর বিপরীতে প্রান্তিক খামারিদের একটি ডিমের উৎপাদনে খরচ হয় ১০ দশমিক ২৯ টাকা, ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদনে খরচ হয় ১৫৫-১৭০ টাকা এবং ১ কেজি সোনালি মুরগি উৎপাদনে খরচ হয় ২৪০-২৬০ টাকা। এমন অবস্থায় সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে কর্পোরেট কোম্পানি লাভবান হলেও প্রান্তিক খামারিরা ছিটকে পড়বে।

সুমন হাওলাদার আরও বলেন, মুরগির খাদ্য ও বাচ্চার দাম আগে ঠিক না করে মুরগি ও ডিমের দাম ঠিক করে কর্পোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেটের গোড়া শক্ত করা হয়েছে। নতুন যৌক্তিক মূল্যে কর্পোরেট গ্রুপগুলো লাভবান হলেও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন প্রান্তিক খামারিরা।

দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা ৪ কোটি হলেও উৎপাদন হয় সাড়ে ৪ কোটি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে ডিম আমদানির দরকার নেই। কর্পোরেটদের স্বার্থ রক্ষায় যে অযৌক্তিক ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এই মূল্য বাতিল করে নতুন করে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। ডিম আমদানি বন্ধ এবং নতুন করে নির্ধারণ করা দাম বাতিল করা না হলে প্রান্তিক খামারিরা আন্দোলনে নামবেন বলেও প্রতিক্রিয়ায় মন্তব্য করেছেন তিনি।

এর আগে, গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সই করা চিঠিতে দেশের বাজারে ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরএইচটি/জেডএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *