৪০ দিন পর মারা গেলেন গুলিবিদ্ধ সাব্বির

৪০ দিন পর মারা গেলেন গুলিবিদ্ধ সাব্বির

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ কুমিল্লার সাব্বির হোসেন (১৯) অবশেষে মারা গেছেন। ৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে দেবিদ্বার ভিংলাবাড়ি এলাকায় তার মৃত্যু হয়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ কুমিল্লার সাব্বির হোসেন (১৯) অবশেষে মারা গেছেন। ৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে দেবিদ্বার ভিংলাবাড়ি এলাকায় তার মৃত্যু হয়। 

নিহত সাব্বির হোসেনের বাড়ি জেলার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল এলাকার হলেও তিনি ছোটবেলা থেকেই নানাবাড়ি দেবিদ্বারের ভিংলাবাড়িতে মায়ের সঙ্গে থাকতেন। 

সাব্বিরের মৃত্যুর বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুল ইসলাম। 

স্থানীয়রা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয়ের দিন গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর বিজয় মিছিল করে ছাত্রজনতা। ওইদিন বিকেলে মিছিল করতে দেবিদ্বার থানার দিকে যান মিছিলকারীরা। এ সময় পুলিশ থানার ছাদে উঠে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকলে ১৫-১৬ জন মিছিলকারী গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে সাব্বিরের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে। 

অপরদিকে পুলিশের দাবি, ওইদিন দেবিদ্বার নিউমার্কেট গোলচত্বর এলাকায় মিছিল করা অবস্থায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ মিছিলকারীদের ওপর হামলা করে গুলিবর্ষণ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হন সাব্বির। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তার মাথায় সিটিস্ক্যান করে মাথার ভেতরে গুলি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে অস্ত্রোপচার করে সাব্বিরের মাথার ভেতর থেকে গুলি বের করা হয়। পরে ধীরে ধীরে  সুস্থ হতে থাকে সাব্বির। কিছুদিন পর ঢাকা মেডিকেল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে দেবিদ্বার ভিংলাবাড়ি ফিরে আসেন তার মা এবং তিনি। শনিবার সকালে হঠাৎ নিজের অস্বস্তি লাগছে বলে মাকে জানান সাব্বির। পরে ঘরে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়েন। তাকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

পুলিশ পরিদর্শক শাহিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাব্বিরের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আমরা তার বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে তার মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু স্থানীয় লোকজন আমাদের বাধা সৃষ্টি করে বলেন- তারা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করবেন। পরে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সাব্বিরের মরদেহ দাফনের অনুমতি দিয়ে থানায় ফিরে আসি। 

নিহত সাব্বির হোসেন তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। বছর তিনেক আগে তার বাবার মৃত্যুর পর সাব্বির সংসারের হাল ধরতে অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। তার মৃত্যুতে পরিবারটি এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। 

কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সির বরাত দিয়ে উত্তর জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান তামিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিহত সাব্বির আমাদের দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। দলীয় পদ-পদবি না থাকলেও তিনি আমাদের দলীয় প্রতিটি প্রোগ্রামে অংশ নিতেন। আমাদের কাছে তার ছবি আছে। সে ছাত্র আন্দোলনের সময় সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিল। আমরা তার হত্যার বিচার চাই। দলীয়ভাবে আমরা তার পরিবারের পাশে দাঁড়াব ইনশাআল্লাহ। 

আরিফ আজগর/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *