আগুনে ‘স্বপ্ন’ সঁপে দিলেন পোল্ট্রি খামারি মিন্টু 

আগুনে ‘স্বপ্ন’ সঁপে দিলেন পোল্ট্রি খামারি মিন্টু 

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পূর্ব শিলুয়ার বাসিন্দা আমির হোসেন পাটোয়ারী মিন্টু। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত অর্থ, স্ত্রীর গহনা বিক্রির টাকা ও আত্মীয় স্বজনদের থেকে ধার করে গড়ে তুলেছিলেন আবিদ পোল্ট্রি নামের স্বপ্নের খামার। এতোদিন সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চললেও সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ১৫৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৩ ফুট প্রস্থের খামারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে খামারে থাকা ৭ হাজার লেয়ার মুরগি মারা যায়। নিমিষেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যায় মিন্টুর। 

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পূর্ব শিলুয়ার বাসিন্দা আমির হোসেন পাটোয়ারী মিন্টু। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত অর্থ, স্ত্রীর গহনা বিক্রির টাকা ও আত্মীয় স্বজনদের থেকে ধার করে গড়ে তুলেছিলেন আবিদ পোল্ট্রি নামের স্বপ্নের খামার। এতোদিন সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চললেও সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ১৫৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪৩ ফুট প্রস্থের খামারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে খামারে থাকা ৭ হাজার লেয়ার মুরগি মারা যায়। নিমিষেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যায় মিন্টুর। 

জানা গেছে, বন্যার আগেই খামারে ৫০ লাখ টাকা খরচ করে ৭ হাজার লেয়ার মুরগি তুলেন মিন্টু। খামারটি পানিতে তলিয়ে ২৯ সপ্তাহ বয়সী খাঁচার ভেতরে থাকা লেয়ার মুরগিগুলো মারা যায়। পানি কমার সঙ্গে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) খামার থেকে মৃত ও দুর্গন্ধযুক্ত মুরগিগুলো স্তূপ করে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে পুড়ে ফেলেন তিনি। 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমির হোসেন পাটোয়ারী মিন্টু বলেন, তিলে তিলে গড়া স্বপ্নকে নিজ হাতে আগুন দিয়ে পুড়ছি। কত বড় অভাগা হলে এমনটি হয় জানি না। ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মুরগি রাখার খাঁচা ও ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্যাস প্লান্ট, খামারে থাকা ৫১ বস্তা খাদ্যসহ সব আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।

আমির হোসেন মিন্টু বলেন, বন্যায় সবমিলিয়ে কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক কিংবা কোন এনজিও থেকে ঋণ না করলেও নিজের সব সঞ্চিত অর্থ, স্ত্রীর গহনা বিক্রি এবং স্বজনদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের ধারকর্জ নিয়ে এ খামার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। এখন পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে পুনরায় খামারটি চালু করতে পারলেও ধার করা টাকা পরিশোধ করার মত কোনও উপায় নেই। সরকারিভাবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা পেলে আমি হয়তো ঘুরে দাঁড়াতে পারব।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, এবারের বন্যায় প্রাণিসম্পদ খাতে ৩৯৬ কোটি ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৪০৩ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। জেলার ছয় উপজেলায় ৩৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৩৮ হাজার ৭৩১টি গরু, ৩৫৯টি মহিষ, ১৫ হাজার ৫৮৮টি ছাগল ও ৭৩৬টি ভেড়া মারা গেছে। এ ছাড়াও ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৫১০টি মুরগি ও এক লাখ ৮৯ হাজার ৪৭২টি হাঁস মারা গেছে। মৃত পশুপাখির মোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩০৮ কোটি ৩৬ লাখ ৩৯ হাজার ৮৩০ টাকা।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক বলেন, বন্যায় জেলার প্রাণিসম্পদ খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে সমন্বয় করে আমরা খামারি ও কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো চেষ্টা করছি। এছাড়া দাপ্তরিকভাবে কোনও ধরনের প্রণোদনা অথবা সহায়তা আসলে তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করব।   

তারেক চৌধুরী/এমএসএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *