ফেনীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে মোট আসামি করা হয়েছে ২ হাজার ৯৪১ জনকে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফেনীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে মোট আসামি করা হয়েছে ২ হাজার ৯৪১ জনকে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার একটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি মামলায় ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুশফিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফেনী মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে সর্বশেষ মামলাটি দায়ের করা হয়। গত ৫ আগস্ট দুপুরে শহরের জেল রোডে জাফর আহম্মদকে (৫৩) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এতে ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে ২০৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। নিহত জাফর আহম্মদ পেশায় টমটম চালক ছিলেন। তার বাড়ি সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর এলাকায়।
একই সূত্র জানা যায়, গত ৪ আগস্ট মহিপালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ছোড়া গুলিতে মাহবুবুল হাসান মাসুম নিহত হন। এ ঘটনায় ৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ১৬২ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ফেনী মডেল থানা সূত্র আরও জানায়, মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এখন পর্যন্ত নিহত শিহাব হত্যা মামলায় ৩০১ জন, শ্রাবণ হত্যা মামলায় ৩০৯ জন, মাসুদ হত্যা মামলায় ৩৩৪ জন, সবুজ হত্যা মামলায় ৪৬৫ জন, জাকির হোসেন শাকিল হত্যা মামলায় ২৭১ জন এবং ছাইদুল হত্যা মামলায় ২৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এসব মামলায় জেলার অন্তত অর্ধশতাধিক সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক আটটি মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথমদিনে ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে নির্বিচারে গুলি করে অস্ত্রধারীরা। এতে ৯ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি ও সিসি ফুটেজে দেখা গেছে, অস্ত্রধারীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
তারেক চৌধুরী/আরকে
