শেখ সেলিমের সঙ্গে দেখা করতে টাকা দিতে হতো বাসার পিয়ন-দেহরক্ষীকে

শেখ সেলিমের সঙ্গে দেখা করতে টাকা দিতে হতো বাসার পিয়ন-দেহরক্ষীকে

গোপালগঞ্জ-২ (সদর-কাশিয়ানীর একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সঙ্গে ঢাকার বনানীর চেয়ারম্যান বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে তার বাসার পিয়ন ও দেহরক্ষীকে ৭০ হাজার  টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।

গোপালগঞ্জ-২ (সদর-কাশিয়ানীর একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সঙ্গে ঢাকার বনানীর চেয়ারম্যান বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে তার বাসার পিয়ন ও দেহরক্ষীকে ৭০ হাজার  টাকা ঘুষ দিতে হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।

বাসার দেহরক্ষী ও পিয়নকে টাকা না দিলে শেখ সেলিমের সঙ্গে দেখা করতে পারত না কেউ। এমনকি টাকা না দিলে ঘাড় ধরে বের করে দিতেন তারা। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এদের এমন কর্মকাণ্ডে শেখ সেলিমের নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীদের মধ্যে সেলিমের প্রতি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল বলে দাবি ওই ছাত্রলীগ নেতার।

ওই দুই কর্মচারী হলেন- সরকারি দেহরক্ষী পুলিশ কনস্টেবল জব্বার তালুকদার ও বাসার পিয়ন শরীফুল ইসলাম শরীফ। 

সম্প্রতি গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু খান তার ফেসবুক প্রোফাইলে এমন অভিযোগ তুলে একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে ওই দুই কর্মচারীকে কুলাঙ্গার বলেও আখ্যায়িত করেছেন তিনি। 

ছাত্রলীগ নেতা রাজু খান তার ফেসবুকে ওই দুইজনের ছবি পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, শেখ সেলিম ভাইয়ের বাসার দুই কুলাঙ্গার, জারজ, চাকর শরীফ এবং জব্বার। সেলিম ভাইয়ের বাসায় যত সব বদনাম করেছে। ২০ সালে আমি গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলাম। তখন সেলিম ভাইয়ের বাসায় ঢুকার জন্য শরীফ আর জব্বার আমার কাছ থেকে জোর করে খারাপ ব্যবহার করে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছিল। একদিন টাকা দিয়ে ঢুকলে পরের দিন আর না দিলে ঢুকতে দিত না। হাত ধরে, ঘাড় ধরে বের করে দিতে। কষ্টের কথা কাউকে বলতে পারতাম না। ওই কষ্টে আর কোনো দিনও সেলিম ভাইয়ের বাসায় যাইনি। আমি জব্বার এবং শরীফ বাস্টার্ডকে কখনো সামনে পেলে গাছের সাথে ঝুলিয়ে পেটাবো। গোপালগঞ্জে সেলিম ভাইয়ের রাজনীতি নষ্ট করেছে শরীফ, জব্বার এবং কয়েকজন গোপালগঞ্জের কুলাঙ্গার। এখন শেখ হাসিনার জন্য, সেলিম ভাইয়ের জন্য গোপালগঞ্জে তোর কোনো আব্বারা মাঠে আছো। আমরা বঞ্চিতরাই মাঠে আছি, কে কী দিলো তা আমাদের প্রয়োজন নেই। শেখ হাসিনার প্রশ্নে কোনো আপোষ নয়, ছিলাম, আছি, থাকব ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু খান বলেন, আমি তখন ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলাম। যার কারণে  প্রায়ই সেলিম ভাইয়ের বাসায় যেতে হতো দেখা করতে। বাসায় ঢুকতে গেলে জব্বার এবং শরীফকে টাকা না দিলে ঢুকতে দিত না। ওরা দুইজন আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিছে। তবে ওইবার সভাপতি না হতে পেরে যে খারাপ লেগেছে, তার চেয়ে বেশি খারাপ লেগেছে বাসায় ঢুকার সময় পিয়নদের ওই ব্যবহার।  যার কারণে আর কোনো দিন সেলিম ভাইয়ের বাসা বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি আর যায়নি। 

শেখ সেলিমের বাসায় দীর্ঘদিন কাজ করা শামীম হাসান বলেন, সেলিম ভাইয়ের বাসায় প্রায় অর্ধশত স্টাফ আছে। এর মধ্যে ঝালকাঠির জব্বার তালুকদার হচ্ছে পুলিশের কনস্টেবল। তিনি ২০০৪ সালের পর থেকে সেলিম ভাইয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব আছেন। ময়মনসিংহের শরীফুল ইসলাম শরীফ হচ্ছে সেলিম ভাইয়ের পিয়ন। গোপালগঞ্জের ইমরুল কায়েস হচ্ছে সেলিম ভাইয়ের সহকারী ব্যক্তিগত সচিব। এরা তিনজনই সেলিম ভাইয়ের বাসায় আসা নেতাকর্মীদের কাছ থেকে ব্লাকমেইল করে টাকা নিত। এরা সব সময় সেলিম ভাইয়ের কাছে ভালো সাজতো। আবার আকাম এরাই বেশি করতো। ওদের কারণেই নেতাকর্মীদের মধ্যে সেলিম ভাইয়ের প্রতি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। আর বিগত কয়েক বছরে ওরা যা কামায়ছে তাদের সাত পুরুষ খাইয়ে বেঁচে থাকতে পারবে। 

আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *