‘লাশগুলো পেলেও মনে সান্ত্বনা পেতাম’

‘লাশগুলো পেলেও মনে সান্ত্বনা পেতাম’

‌‘কি বলব বাবা কিছু বলার নাই। একই পরিবারের তিনজন মারা গেছে। নদীতে সারারাত খোঁজাখুঁজি করেছে, কিন্তু পাইনি। যারা নদীতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছে তারা বেঁচে থাকতে এতোক্ষণ পাওয়া যেত। কিন্তু একজনকেও পাইনি। লাশগুলো পেলেও মনে সান্ত্বনা পেতাম।’

‌‘কি বলব বাবা কিছু বলার নাই। একই পরিবারের তিনজন মারা গেছে। নদীতে সারারাত খোঁজাখুঁজি করেছে, কিন্তু পাইনি। যারা নদীতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছে তারা বেঁচে থাকতে এতোক্ষণ পাওয়া যেত। কিন্তু একজনকেও পাইনি। লাশগুলো পেলেও মনে সান্ত্বনা পেতাম।’

এভাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন পদ্মা নদীতে নিখোঁজ রাজুর নানী আশরাফুন বেগম ( ৭০)। আশরাফুন বেগম সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহী নগরীর গুড়িপাড়ার চর মাজারদিয়াড় ঘাটে এভাবে কথাগুলো বলছিলেন। 

তিনি বলেন, তারা জমিতে টমেটো লাগিয়ে বাসায় ফিরছিল। এ সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এরপরে তারা সাঁতরে দুইজন পাড়ে উঠেছে , চারজন উঠতে পারেনি। নদীতে উদ্ধার করতে যাওয়া আরেক জামাই খরব দিচ্ছে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন- চর মাজারদিয়াড় এলাকার এনামুলের ছেলে রাজুু (২১), এন্তাজুলের ছেলে সবুজ (২১), খলিলের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩০) ও কালামের ছেলে ফারুক (১৮)।

জানা গেছে, রাজু ও সবুজ চাচাতো ভাই। মোহম্মদ আলী রাজুর দুলাভাই। রাজুর প্রতিবেশি ভাই হয় ফারুক। রাজুর সন্তান হয়েছে তিন মাস আগে।  সবুজ বিবাহিত তবে তার সন্তান নেই। মোহাম্মদ আলীর এক ছেলের বয়স ১২ বছর ও মেয়ের বসয় ১০ বছর। ফারুকের বাবা কৃষিকাজ করেন। 

নিখোঁজের স্বজন মোসা. টকেনা বেগম বলেন, রাত-দিন সব সময় পানির নিচে অন্ধকার। আর নদীর পানি ঘোলা। একহাত দূরে কিছু দেখা যায় না। দিন হলে ওতটা সমস্যা হতো না। আর ভরা নদীতে মানুষ পানিতে নেমে খুঁজতেও ভয় পাই। যদি তারা জীবিত থাকত তাহলে এতোক্ষণ পাওয়া যেত। ধরে নিতে হবে তারা আর বেঁচে নেই। 

নৌকাডুবির ঘটনা ঘটা চার মাজারদিয়াড় এলাকায় থাকা নিখোঁজ সবুজের দুলাভাই মো. মেজর বলেন, আমরা সারারাত খুঁজেছি। চারজনের একজনকেও পাওয়া যায়নি। সকালে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনরা এসেছে। তাদের ডুবুরিরা খোঁজাখুঁজি করছে।

রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার লতিফুর বারি বলেন, তাদের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা কাজ করছে। এখনও কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযান চলমান রয়েছে। 

এ বিষয়ে পবা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধারের কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলার পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চর মাঝারদিয়াড়ে পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় চার শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন।

শাহিনুল আশিক/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *