ওজোপাডিকোর ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের দুর্নীতি তদন্তের দাবি

ওজোপাডিকোর ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের দুর্নীতি তদন্তের দাবি

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) অপ্রয়োজনীয় নিয়োগ এবং আত্মঘাতি প্রকল্পগুলো বাতিলের দাবি উঠেছে। একই সঙ্গে গত ১৬ বছরে বাস্তবায়ন করা প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) অপ্রয়োজনীয় নিয়োগ এবং আত্মঘাতি প্রকল্পগুলো বাতিলের দাবি উঠেছে। একই সঙ্গে গত ১৬ বছরে বাস্তবায়ন করা প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান বিএনপি সমর্থিত পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা। এ সময় গত ১৬ বছরের পদোন্নতি বঞ্চনা দূর করা, নির্যাতনমূলক শাস্তি ও গণবদলি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৬ বছরে ওজোপাডিকোতে ৪ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাট হয়েছে। এসব প্রকল্পের দুর্নীতি তদন্ত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে স্মার্ট মিটারিং প্রকল্প বাতিল করে বর্তমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় অর্থ সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ গ্রাহকরাই বর্তমানে বাজার থেকে মিটার কিনে নতুন সংযোগ নিচ্ছেন। এই অবস্থায় প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রকল্পের কোনো প্রয়োজন নেই।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মনপুরা দ্বীপাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আপগ্রেডেশন প্রকল্প বাতিল করা প্রয়োজন। কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্প আত্মঘাতি। কারণ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সোলার পাওয়ার প্রডিউসারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে হবে ২০-২৪ টাকায়। আর গড় বিক্রয় মূল্য ৮.৬৫ টাকা। গড়ে প্রতি ইউনিটে লোকসান হবে ১২-১৬ টাকা। আমরা মনপুরায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানাই। প্রকল্প ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নিলামে মালামাল বিক্রির দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানাই।

লিখিত বক্তব্যে মজিবর রহমান বলেন, ওজোপাডিকোতে কর্মকর্তা নিয়োগ হয়েছে ৫৩৭ জন। শ্রমিক নিয়োগ হয়েছে মাত্র ১৯৪ জন। অপ্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে কোম্পানিতে মাথাভারী প্রশাসন সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন), নির্বাহী পরিচালক (পিঅ্যান্ডডি), একটি প্রধান প্রকৌশলী, ৪টি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, মহাব্যবস্থাপকসহ (হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড অ্যাডমিন) অপ্রয়োজনীয় সকল পদ বিলুপ্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, ওজোপাডিকোর মোট গ্রাহক ১৫ লাখ ৯২ হাজার ৬৪৮ জন। এর বিপরীতে সরাসরি গ্রাহক সেবার দায়িত্বে থাকা কারিগরি শ্রমিক বা লাইন স্টাফ আছেন ৪৮৫ জন। অর্থাৎ প্রতি ৩ হাজার ২৪৮ জন গ্রাহককে সেবা প্রদানের জন্য মাত্র একজন লাইন স্টাফ রয়েছেন। তাদের ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এ অবস্থায় এসব পদে শ্রমিক নিয়োগ করা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদসহ দলবাজ ও স্বেচ্ছাচারী কর্মকর্তাদের অপসারণ, আউট সোর্সিং নিয়োগ প্রথা বাতিল করে স্থায়ীভাবে শ্রমিক নিয়োগ, কর্মকর্তাদের মতো শ্রমিকদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা, কর্মকর্তা-শ্রমিক কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর করা এবং কোম্পানিতে পিআরএল ব্যবস্থা চালুর দাবি জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমানসহ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, আ য ম সরোয়ার, শেখ মো. আলীম, হুমায়ুন কবির, মাহমুদুল হক, শেখ মো. আলমগীর হোসেন, কবির হোসেন ফরাজী, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সালাম, কাজী আলী আহসান সানী, আলী হোসেন প্রমুখ  উপস্থিত ছিলেন। 

মোহাম্মদ মিলন/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *