শরীয়তপুরের এজিপির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

শরীয়তপুরের এজিপির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ওই সম্পদ দখলে রাখা ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে শরীয়তপুর জজ কোর্টের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এজিপি) হুমায়ুন মুন্সীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। দুদক আইন ২০০৪ এর কয়েকটি ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

গতকাল শরীয়তপুর জজ কোর্টে মামলাটি দায়ের করেছেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জজ কোর্টের আইনজীবী হুমায়ুন কবির মুন্সী ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে সহকারী সরকারি কৌসলির (এজিপি) দায়িত্ব পান। এজিপি হিসেবে তিনি শরীয়তপুর জজ কোর্ট ও সদর উপজেলার চিকন্দি কোর্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্ব হিসেবে তিনি সরকারের বিভিন্ন দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করতেন। ওই সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২০ সালে তার বিভিন্ন দুর্নীতি সম্পর্কে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর দুদক থেকে হুমায়ুন কবির মুন্সীকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু হুমায়ুন কবির তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার ৭৮৫ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেন। এ ছাড়াও তার ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬০ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার তথ্যের প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এরপর বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর জজ কোর্টে এজিপি হুমায়ুন কবির মুন্সীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান ।

বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর জজ কোর্টের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এজিপি) হুমায়ুন কবির মুন্সী বলেন, আমার সম্পদের অনুসন্ধান করেছে দুদক। দুদকের কাছে আমি যে সম্পদের বিবরণী জমা দিয়েছি তার বাইরেও কিছু সম্পদের তথ্য দুদক পেয়েছে। আমি এখন আইনিভাবে মোকাবেলা করব। এ ব্যাপারে আমার কাছে আইনি ব্যাখা রয়েছে।

দুদক শরীয়তপুর জজ কোর্টের আইনজীবী রাশেদুল হাসান মাসুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এজিপি) হুমায়ুন কবির মুন্সীর বিরুদ্ধে দুদকের একটি মামলা আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আগামী রোববার এই মামলাটির বিষয়ে আদালতের আদেশ থাকতে পারে। কারণ মামলাটি আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। 

দুনীর্তি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, হুমায়ুন কবির মুন্সী জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখায় তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন এবং স্থাবর -অস্থাবর সম্পদ গোপন করায় তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এই দুইটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। হুমায়ুন কবিরের সম্পদ বিবরণীতে বর্ণিত ও প্রদর্শিত তার সকল আয়ের উৎস পর্যালোচনা করা হয়েছে। রেকর্ডপত্রদৃষ্টে দেখা যায়, তিনি অধিকাংশ সম্পদ এজিপি থাকাকালীন সময় অর্জন করেছেন। যা অভিযোগের সাথে সংগতিপূর্ণ।

সাইফ রুদাদ/এনএফ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *