গৃহবধূর মরদেহ বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক স্বামী-শাশুড়ি

গৃহবধূর মরদেহ বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক স্বামী-শাশুড়ি

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ তার বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি। 

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ তার বাবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসে আটক হয়েছেন স্বামী ও শাশুড়ি। 

আটকরা হলেন- গৃহবধূর স্বামী স্বামী রায়হান পারভেজ (৩৫) ও শাশুড়ি আবেদা খাতুন (৫৫)। তাদের বাড়ি খুলনা জেলার রুপসা থানার আইচগাতি গ্রামে।

বুধবার (২৮ আগস্ট) উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম থেকে তাদেরকে আটক করে কাশিয়ানী থানা পুলিশ। নিহত গৃহবধূ সাবিকুন্নাহার ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে।

মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে সাবিকুন্নাহারের ছোট ভাই সোহাগকে তার স্বামী রায়হান পারভেজ ফোন করে জানায় সাবিকুন্নাহার অজ্ঞান হয়ে গেছে। খবর পেয়ে সাবিকুন্নাহারের বড় ভাই ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে সাবিকুন্নাহার মারা গেছেন। মরদেহ নিয়ে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন কাশিয়ানীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে সাবিকুন্নাহারের মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন সাবিকুন্নাহারের বাবার বাড়ি কাশিয়ানীর শংকরপাশায় এসে পৌঁছায়। চলে মরদেহ দাফন-কাফনের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তার স্বজনরা। এতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে মরদেহের সঙ্গে আসা লোকজনকে আটক করেন তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাদেরকে দেওয়া হয়। পরে বুধবার সকালে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহতের মা রিজিয়া বেগম জানান, দেড় বছর আগে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সাবিকুন্নাহারের স্বামী রায়হান পারভেজ স্কয়ার কোম্পানিতে এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কর্মরত ছিলেন। সাবিকুন্নাহার তার স্বামী ও পাঁচ মাস বয়সী একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। প্রায়ই ঝগড়া হতো, টাকা-পয়সা চেয়ে সাবিকুন্নাহারকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো শ্বশুর বাড়ির লোকজন। 

সাবিকুন্নাহারের মায়ের অভিযোগ, মেয়েকে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে মেয়ে জামাই ও তার পরিবারের লোকজন। তার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্তি কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

মাহমুদুল হাসান রাজন/জেডএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *