দান করে ছবি তোলা যাবে?

দান করে ছবি তোলা যাবে?

বিপদ-আপদে মানুষের পাশে মানুষ দাঁড়ায়, সহযোগিতায় এগিয়ে আসে এটাই মানবতার শিক্ষা। মানবতার নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এই শিক্ষাই দিয়েছেন। 

বিপদ-আপদে মানুষের পাশে মানুষ দাঁড়ায়, সহযোগিতায় এগিয়ে আসে এটাই মানবতার শিক্ষা। মানবতার নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এই শিক্ষাই দিয়েছেন। 

অপরকে সাহায্য করার মাধ্যমে মানুষ নিজেকেও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। মানবতাবাদী অন্তরের কারণে মানুষের মনে তার প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়। অন্যদের মাঝে সমাজসেবী ও কল্যাণকামীকে মানুষ কোনো ছলচারতুরী ছাড়া ভালোবাসেন। 

আল্লাহর রাসূল সা. নিজেও অন্যের কল্যাণকামীকে সবথেকে শ্রেষ্ঠ মানুষ বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি নিজেও ছিলেন কল্যাণকামী। অন্যের বিপদে আপদে সবসময় এগিয়ে আসতেন। মানুষকে মানবতার কাজে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি এর বিভিন্ন ফজিলতের কথা বর্ণনা করেছেন।

এক হাদিসে রাসূল সা. বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’(বুখারি, হাদিস : ১৭৩২)

অপর এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. আরও  বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ সে অপর ভাইয়ের সাহায্যে থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৩১৪)

বিপদে-আপদে অন্যকে সাহায্য করার বিষয়টি মানবতার দাবি ও নববী সুন্নতের অংশ। বিভিন্ন দুর্যোগে অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর চিত্র দেখা যায়। বর্তমানে অসহায়কে সাহায্য করে সেই ছবি তুলে প্রচারের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। এতে অনেক সাহায্য গ্রহীতা বিব্রতবোধ করেন। তাই স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই অন্যকে সাহায্য করার দৃশ্য প্রচারের বিষয়টি নিয়ে নিন্দা করেন সচেতন মানুষেরা।

তবে অনুদান অথবা সাহায্যের ছবি প্রচারের মাধ্যমে যদি কারো উদ্দেশ্য হয়ে থাকে যে, মানুষ তার এ দান দেখে অন্যের সাহায়ে এগিয়ে আসতে  উদ্বুদ্ধ হবে তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে সেক্ষেত্রেও দান গ্রহীতার অনুমতি নিয়ে ছবি তুলতে হবে। 

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

إِنْ تُبْدُوا الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِنْ تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا الْفُقَرَاءَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ

‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান কর তবে তাও উত্তম, আর যদি তোমরা তা গোপনে কর এবং তা অভাবগ্রস্তদেরকে দান কর, তবে তা তোমাদের জন্য আরো উত্তম।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭১)

তবে দান, সাহায্যের ছবি তোলার মাধ্যমে  যদি মানুষকে দেখানোর ইচ্ছা থাকে তাহলে তা জায়েজ হবে না। কারণ, তখন এটি সাধারণ দানের পরিবর্তে রিয়া বা লোক দেখানো আমল হিসেবে গণ্য হবে। আর রিয়া শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম। কারণ তা ছোট শিরকের অন্তর্ভুক্ত। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল সা. বলেছেন,

إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الشِّرْكُ الْأَصْغَرُ قَالُوا: وَمَا الشِّرْكُ الْأَصْغَرُ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: الرِّيَاءُ

‘আমি তোমাদের ওপর যা ভয় করি তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে শিরকে আসগর (ছোট শিরক)। তারা বলল: হে আল্লাহর রাসূল সা. শিরকে আসগর কী? তিনি বললেন: রিয়া (লোক দেখানো আমল)।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৩৬৩০)

দান-সদকা, অন্যকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে উত্তম হল ছবি না তোলা। কারণ কিছু উলামায়ে কেরামের দৃষ্টিতে অনর্থক ছবি তোলাও হারাম।

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *