সহজ শর্তে বিক্রি হবে কাস্টমসে আটকা সাবেক ৪৪ মন্ত্রী-এমপির গাড়ি

সহজ শর্তে বিক্রি হবে কাস্টমসে আটকা সাবেক ৪৪ মন্ত্রী-এমপির গাড়ি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৪৪টি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সংসদ বিলুপ্ত হয়ে গেলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও বিলুপ্তের আগেই অন্তত ৭ জন সংসদ সদস্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে আটকে যাওয়া গাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এমপিদের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৪৪টি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সংসদ বিলুপ্ত হয়ে গেলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও বিলুপ্তের আগেই অন্তত ৭ জন সংসদ সদস্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে আটকে যাওয়া গাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

যদিও এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো বিস্তারিত নির্দেশনা আসেনি। তবে এই গাড়িগুলো বিক্রির ক্ষেত্রে শর্ত সহজ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করেছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু, নাটোর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান মঞ্জু, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরি, সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস, হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরসহ অন্তত ৫১ জন।

তাদের মধ্যে মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ৭ জন শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়েছেন। বাকিদের গাড়ি এখন আটকে গেছে।

কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক সুবিধার আওতায় বেশিরভাগ গাড়ি জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করা হয়েছে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগট মডেলের এসব গাড়ির ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি চার হাজার সিসি। সংসদ সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। এ ধরনের গাড়ির ওপর কর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে; তবে এমপিদের তা দিতে হয় না। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়নি।

এনবিআর থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দামের গাড়ি আমদানি করেছেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। তার ব্যাংক ঋণপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তিনি একটি গাড়ি আমদানির জন্য এক লাখ ১১ হাজার ডলারের এলসি খোলেন। শুল্ককরসহ এ গাড়ির দাম পড়বে প্রায় ১১ কোটি টাকা। তবে তিনি তার গাড়ি ছাড়াতে পারেননি।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান বলেন, ৬ আগস্টের আগে যারা শুল্কায়ন সম্পন্ন করেছেন তাদের গাড়ি খালাস হয়ে গেছে। তবে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার পর এমপি হিসেবে শুল্কমুক্ত সুবিধা আর তারা পাবেন না। এক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়ায় শুল্ক দিয়ে এসব গাড়ি খালাস নিতে হবে।

এদিকে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ি যদি যথাযথ প্রক্রিয়ায় কেউ খালাস না করেন তবে সেগুলো বিক্রি করতে পারে সরকার। গত বুধবার (২৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, সাবেক এমপিদের নামে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে আটকে থাকা শুল্কমুক্ত গাড়ি ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না। ফেরত পাঠালে দেশ রাজস্ব হারাবে। তাই এই গাড়িগুলো বিক্রি করার শর্ত সহজ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এমআর/এমজে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *