ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় দায়ী রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে ফেনীতে মানববন্ধন করেছে নাগরিক সমাজ।
গতকাল ফেনীর-ছাগলনাইয়া সড়কের সোনাপুর এলাকার হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে আমরা ফেনীবাসী ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে ত্রাণের বস্তা দিয়ে বানানো বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে উজানের সব বাঁধ ভেঙে দেওয়া, পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, দায়ী রাষ্ট্রকে বিচারের মুখোমুখি করা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তারা।
বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোটের (বিএনসিএ) আহ্বায়ক ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, এবারের বন্যার মতো এমন ভয়াবহ চিত্র বিগত ১০০ বছরে ফেনী জেলার ইতিহাসে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র ফেনী জেলার এ ভয়াবহ বন্যায় ছয় উপজেলার পানিতে তলিয়ে ৬৪ হাজার ১৬১টি গবাদিপশু ও ২৩ লাখ চার হাজার ৪১০টি হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে। এতে প্রাণিসম্পদ খাতে প্রায় ৩৯১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বক্তব্যে উজানের বিভিন্ন নদীতে থাকা বাঁধ ভেঙে দেওয়া, অন্যায় আচরণের জন্য দায়ী সকলকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা, দায়ীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে বন্যাদুর্গত প্রত্যেককে সেই ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত এবং জলবায়ুর ন্যায্যতা নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল বলেন, এবারের বন্যায় দুই তলা ভবনেও পানি উঠেছে। ষড়যন্ত্রের এ বন্যায় সব তছনছ হয়ে মানুষজন আজ সব হারিয়েছে। বিশ্ব মোড়লরা পানি ও বায়ুকে নষ্ট করে আমাদের মানবাধিকার হরণ করছে। এখন আবার প্রতিবেশি দেশ ভারত রাজনৈতিক বন্যা দিয়ে আমাদের ভাসিয়েছে। আমার দেশের পানির নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবে অন্যের হাতে থাকতে পারে না। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের এ অন্যায়ের বিচার চাই।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), ইউথ ফর ক্লাইমেট জাস্টিজ, প্রয়াস, মিশন গ্রীণ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষজন অংশ নেন। এতে দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন পরিবেশবাদী সংগঠন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ ও রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি)।
তারেক চৌধুরী/এনএফ