ঝালকাঠি থেকে যেভাবে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হলেন মিরাজুল

ঝালকাঠি থেকে যেভাবে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হলেন মিরাজুল

মাঠে যতটা চঞ্চল, ব্যক্তি জীবনে সম্পূর্ণ বিপরীত মিরাজুল ইসলাম। একেবারে ধীর-সুস্থতা। বয়স বিশের নিচে হলেও চিন্তা-চেতনার পরিপক্বতা অনেক। 

মাঠে যতটা চঞ্চল, ব্যক্তি জীবনে সম্পূর্ণ বিপরীত মিরাজুল ইসলাম। একেবারে ধীর-সুস্থতা। বয়স বিশের নিচে হলেও চিন্তা-চেতনার পরিপক্বতা অনেক। 

সাফ অ-২০ টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলেও। জাতীয় দলে ডাক পেয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও কণ্ঠে পরিমিতবোধ, ‘একটা স্বপ্ন ছিল জাতীয় দলে ডাক পাওয়া সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এখন নিজেকে আরও বেশি এগিয়ে নিতে হবে। গোল করতে চাই বা এত গোল করব এ রকম কোনো লক্ষ্য আপাতত নেই। প্রথম লক্ষ্য খেলা, তারপর নিয়মিত হওয়া। 

জাতীয় দলে এর আগেও ডাক পেয়েছিলেন মিরাজুল। সেই বার অবশ্য ক্যাম্প করা হয়নি। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘একবার জাতীয় দল ঘোষণা হলেও করোনার জন্য ক্যাম্প আর শেষ পর্যন্ত হয়নি। সেই সময় আমি দলে ছিলাম।’

ঝালকাঠিতে জন্ম নেওয়া মিরাজুল এখন বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন সম্ভাবনার নাম। বিকেএসপিতে ফুটবলের হাতেখড়ি হলেও বাফুফের এলিট একাডেমি থেকেই মূলত তার পথচলা। বাফুফের এলিট একাডেমি থেকে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল।

মোহামেডান ক্লাব মিরাজুলকে নিতে বাফুফেকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিল। মাঝে ডাক এসেছিল ইউরোপে খেলার। শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। এই প্রসঙ্গে মিরাজুল বলেন, ‘আমার ইউরোপে খেলার একটি সম্ভাবনা ছিল। দুর্ভাগ্য সেই সময় আমি মাঠের বাইরে ছিলাম। তাই আর যাওয়া হয়নি।’

সাফ অ-২০ ফাইনালে ম্যাচের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট প্রথমার্ধে বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে গোল। বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ জোরালো ফ্রি-কিকে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন মিরাজুল। সেই গোল সম্পর্কে তার বক্তব্য,‘আমি ফ্রি-কিক নিতে পছন্দ করি। প্র্যাকটিসও এমন শট নিয়েছি। ঐ দিনও সেভাবে নিয়েছিলাম, গোল হবে বিশ্বাস ছিল তবে এত সুন্দরভাবে সেটা ভাবিনি। গোলটি দেখতেও ভালো লাগছিল।’

ঝালকাঠির গ্রাম থেকে উঠে আসা ছেলেটি এখন বয়সভিত্তিক পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। নিজের চেষ্টা ও বাবা-মায়ের দোয়াতেই এই অর্জন বলে মন্তব্য তার,‘আসলে আমি সব সময় চেষ্টা করি। চেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। আমার বাবা-মা’র দোয়া সঙ্গী। যেদিন আমার খেলা মা রোজা রাখেন। আমিও নিয়মিত নামাজ পড়ি। আল্লাহ সহায় বলেই আমি এই পুরস্কার ও অর্জন।’

বাংলাদেশের অনেক ফুটবলারের আইডল মেসি-রোনলোদা-নেইমার। মিরাজুল এক্ষেত্রে একেবারেই ব্যতিক্রম, ‘আমি কারো আইডল মানি না। আমার একমাত্র আইডল হযরত মুহাম্মদ স.।’ মিরাজুল অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ। তার এই সাফল্য পুরোটাই আল্লাহ’র অবদান বলে মনে করেন,‘আসলে আমরা সবাই চেষ্টা ও দোয়া করতে পারি। আল্লাহ চেয়েছেন বলেই আমি গোল করতে পেরেছি ও সেরা খেলোয়াড় হয়েছি।’

এজেড/এফআই

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *