‘খুব কষ্টে আছি বাবা, পানি কবে কমবে?’

‘খুব কষ্টে আছি বাবা, পানি কবে কমবে?’

‘বন্যার পানিতে কত কষ্ট করে চলছি। ঘরদুয়ার সব ভাঙি গেছে বন্যায়। কোনোরকম জীবন বাঁচছে। হুত-জি (ছেলে-মেয়ে) লই অনেক কষ্টে আছি। বাবা কয়েক দিন ধরে পানিতে ডুবে আছি। বউ (পুত্রবধূ) হোলাহাইনরে (সন্তান) দূরে রাখছি। ঘর থেকে যেতে মন টানছে না। এজন্য দরজায় ইটের গাঁথনি করে ঘরেই থাকি। খুব কষ্ট পাচ্ছি। পানি কি কমবে? আর কবে কমবে?’

‘বন্যার পানিতে কত কষ্ট করে চলছি। ঘরদুয়ার সব ভাঙি গেছে বন্যায়। কোনোরকম জীবন বাঁচছে। হুত-জি (ছেলে-মেয়ে) লই অনেক কষ্টে আছি। বাবা কয়েক দিন ধরে পানিতে ডুবে আছি। বউ (পুত্রবধূ) হোলাহাইনরে (সন্তান) দূরে রাখছি। ঘর থেকে যেতে মন টানছে না। এজন্য দরজায় ইটের গাঁথনি করে ঘরেই থাকি। খুব কষ্ট পাচ্ছি। পানি কি কমবে? আর কবে কমবে?’

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকালে এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম জামিরতলি এলাকার রোকসানা বেগম (৪৫)। তিনি ওই এলাকার রঙ্গি বাড়ির মহিন উদ্দিনের স্ত্রী। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজন ঘর ছেড়ে কোথাও যাননি।

জানতে চাইলে রোকসানা বেগমের স্বামী মহিন উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, চারপাশে শুধু পানি আর পানি। মাছগুলো ভেসে গেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। কোথাও যেতে পারছি না। ঘর ছেড়ে যেতে মনও টানছে না। বন্যার পানিতে চলাচল করতে গিয়ে পুরো শরীর চুলকাচ্ছে। প্রায় কোমর পর্যন্ত বাড়ির উঠানে পানি। এতে খাবার (বিশুদ্ধ) পানি জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের টিনের ঘরটির ভেতরে এক হাঁটুর ওপর পানি রয়েছে। থাকার সুযোগ নেই। ভাঙনও দেখা দিয়েছে। মাছগুলো ভেসে গিয়ে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। খালের পানি অনবরত বাড়ির দিকে ঢুকছে। আমরা খুব কষ্টে আছি। কোনোরকম বেঁচে আছি। আমাদের রান্নাবান্না মাটির চুলাতে হত। এখন সিলিন্ডার গ্যাসের চুলায় রান্নাবান্না করে খেতে হচ্ছে।

একই এলাকায় প্রায় বুকসমান পানিতে তলিয়ে থাকতে দেখা যায় আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তির বাড়ি। তবে তারা ঘরে কেউ নেই। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বাড়ির সামনের মান্দারী-দিঘলী সড়কটিতেও হাঁটুর ওপরে পানি। গাড়ি চলাচলের সময় পানির ঢেউ গিয়ে রাস্তার পাশের বাড়িগুলোতে আছড়ে পড়ছে। এতে আবুল কালামের বাড়ির একটি ঘর ভেঙে গেছে। বাড়িতে কেউ না থাকলেও একটি বিধ্বস্ত ঘর দাঁড়িয়ে রয়েছে।

পশ্চিম জামিরতলি এলাকার বাসিন্দা খুকি বেগম। তাদের ঘরের পাশেই খাল। এ খালের পানি উপচে পড়েই পুরো এলাকা এখন ডুবে আছে। একটি ছোট ব্রিজ পার হয়ে বুকসমান পানি অতিক্রম করেই তাদের বাড়িতে যেতে হয়। কয়েকটি ইট দিয়ে চকি বসিয়ে জীবনযাপন করছে তারা। সিলিন্ডার গ্যাসের চুলায় চলছে সবার রান্নাবান্না। এ ছাড়া যাদের মাটির চুলা তাদের রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে আছে। আবার অনেকেই বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার গ্যাস কিনে রান্নাবান্না করছেন বলে জানা গেছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমজেইউ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *