ভর্তি ফাইল নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে রোগীর স্বজনরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এতে সিনিয়র স্টাফ নার্সসহ তিনজন আহত হয়েছেন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি বিভাগের সেবা ছাড়া অন্যান্য সকল সেবা বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।
ভর্তি ফাইল নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে রোগীর স্বজনরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। এতে সিনিয়র স্টাফ নার্সসহ তিনজন আহত হয়েছেন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি বিভাগের সেবা ছাড়া অন্যান্য সকল সেবা বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, সিনিয়র স্টাফ নার্স আবু হানিফ, কর্মচারী আব্দুল খালেদ ও দুলাল ঢালী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানায়, বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার তুলাসার এলাকার শারমিন নামে এক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় রোগীর ভর্তি ফাইল নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তর্কে জড়ায় রোগীর স্বজনরা। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে রোগীর স্বজনরা চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে হাসপাতালের জরুরি সভা করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে সেনাবাহিনী।
ভুক্তভোগী সিনিয়র স্টাফ নার্স আবু হানিফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোগীর স্বজনরা বেআইনিভাবে ভর্তি ফাইল নিতে চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান কর্মকর্তারা। এরপর তারা বাইরে গিয়ে লোকজন নিয়ে এসে হাসপাতালে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমিসহ দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
সিনিয়র স্টাফ নার্স সানজিদা বলেন, রোগীর স্বজনরা জোর করে ফাইল নিতে চাইলে আমি তাদেরকে ফাইল না দিয়ে চিকিৎসককে জানাতে বলি। এরপর তারা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে বাইরে গিয়ে লোকজন নিয়ে এসে হামলা চালায়।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, রোগীর ভর্তি হওয়া নিয়ে আমাদের কর্মচারীদের সঙ্গে তুচ্ছ একটি ঘটনা ঘটে। পরে তারা বহিরাগত লোক নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা এখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, তাই আপাতত জরুরি চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য সকল সেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি। আমরা দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমে তারা হাসপাতালের ফার্মেসিতে ঢুকে পড়েছিলেন। পরে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা আমার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলেন। এরপর আমি গেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিলে তারা দৌড়ে বাইরে চলে যান। এরপর লাঠিসোঁটা নিয়ে তারা হাসপাতালে কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতালের পরিস্থিতি পুলিশ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ দায়ের করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাইফ রুদাদ/এএমকে