‘ইসম’ শব্দের অর্থ নাম আর ‘আজম’ শব্দের অর্থ মহান বা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তাআলার অনেক নাম রয়েছে। এসব নামের মধ্যে যে নামগুলো দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হয়, সেই নামগুলোকে ‘ইসমে আজম’ বলা হয়। ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করা হলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
‘ইসম’ শব্দের অর্থ নাম আর ‘আজম’ শব্দের অর্থ মহান বা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তাআলার অনেক নাম রয়েছে। এসব নামের মধ্যে যে নামগুলো দিয়ে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সবচেয়ে বেশি প্রকাশিত হয়, সেই নামগুলোকে ‘ইসমে আজম’ বলা হয়। ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করা হলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
ইসমে আজম আল্লাহর নির্দিষ্ট কোনো নাম কিনা; এ সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীস ও বিজ্ঞ আলেমদের থেকে প্রায় ৪০টি মন্তব্য পাওয়া যায়।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে একাধিক আয়াত ও মাছনুন দোয়ায় ‘ইসমে আজম’ আছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। যেগুলোর আমল করে এবং পড়ে মহান আল্লাহর কাছে কোনো চাওয়া-পাওয়ার কথা জানালে তিনি বান্দাকে তা দান করেন।
রাসূল সা. যেসব দোয়াকে ইসমে আজম বলে ঘোষণা করেছেন এখানে এমন কিছু দোয়া তুলে ধরা হলো—
হজতর বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন,
اللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ بِأَنَّكَ أَنْتَ اللّٰهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ الْأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِىْ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَه كُفُوًا أَحَدٌ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা বি-আন্নাকা আংতাল্লাহ। লা-ইলাহা-ইল্লা অংতাল আহাদুস-সামাদ, আল্লাযি-লাম ইয়ালিদ, ওয়ালাম ইউলাদ, ওয়ালাম-ইয়াকুন লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি এবং জানি যে, তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে আর কোন মাবূদ নেই। তুমি এক ও অনন্য। তুমি অমুখাপেক্ষী ও স্বনির্ভর। যিনি কাউকে জন্মও দেননি। কারো থেকে জন্মও নন। যার কোন সমকক্ষ নেই।’
দোয়াটি শোনার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালাকে তার ইস্মে আজম বা সর্বাধিক বড় ও সম্মানিত নামে ডাকল। এ নামে ডেকে তাঁর কাছে কেউ কিছু প্রার্থনা করলে, তিনি তাকে তা দান করেন এবং কেউ ডাকলে তিনি তার ডাকে সাড়া দেন। (আবু দউদ, হাদিস : ১৪৯৩, তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৫, ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৮৫৭)
আরেক হাদিসে হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মসজিদে নববীতে বসে ছিলাম। তখন জনৈক ব্যক্তি সালাত আদায় করছিল এবং সালাতের পর বলছিল,
اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ الْحَنَّانُ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ يَا حَىُّ يَا قَيُّومُ أَسْأَلُكَ
হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। কারণ তোমারই জন্য সব প্রশংসা। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবুদ নেই। তুমিই সবচেয়ে বড় দয়ালু, বড়দাতা। তুমিই আসমান জমিনের স্রষ্টা। হে মর্যাদা ও দান করার মালিক! হে চিরঞ্জীব, হে প্রতিষ্ঠাতা! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি।
তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে আল্লাহকে ইসমে আজম নিয়ে ডাকে তিনি তাতে সাড়া দেন এবং যখন তাঁর কাছে প্রার্থনা করা হয় তখন তিনি তা দান করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৯৫, তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৫, নাসাঈ, হাদিস : ১৩০০)
হজরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর ইস্মে আজম এই দু’ আয়াতের মধ্যে রয়েছে,
وَإِلٰهُكُمْ إِلٰهٌ وَّاحِدٌ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ
উচাচ্চারণ : ওয়া ইলা-হুকুম ইলা-হূ ওয়া-হিদ, লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়ার রহমা-নুর রহীম।
এছাড়াও সূরা আল ইমরান-এর শুরুতে
الٓمْ اَللهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ
আলিফ লা-ম মী-ম আল্লাহু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৯৬, তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৭৮)