মাদক কারবারিদের গুলিতে গৃহবধূর মৃত্যু : ১৭ জনের নামে মামলা

মাদক কারবারিদের গুলিতে গৃহবধূর মৃত্যু : ১৭ জনের নামে মামলা

রাজধানীর মিরপুর পল্লবী থানাধীন বাউনিয়া বাঁধ এলাকায় চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাদক কারবারি দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে আয়েশা আক্তার (২৬) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।

রাজধানীর মিরপুর পল্লবী থানাধীন বাউনিয়া বাঁধ এলাকায় চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাদক কারবারি দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে আয়েশা আক্তার (২৬) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।

নিহতের স্বামী মিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩৯। মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন— মমিন (৩৫), শাবু (২৮), সম্রাট (২৩), শামিম (৪৫), জয়নাল (৩২), পাতা সোহেল, কালা মোতালেব (৪০), ভাগনে মামুন (৩৮), জাহাঙ্গীর (৩৩), ভেজাল মামুন (৪২), আল-ইসলাম (৪৫), ইউনুস ওরফে ডিস্কু (৪০), রুবেল (৩৮), মজনু (৫০), কালন (৩৫), কামাল (৩৫) ও জয় (২৭)।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পল্লবী থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় রাতেই সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মামলার ১১ নম্বর আসামি আল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

পল্লবী থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পল্লবী থানাধীন মিরপুর সেকশন-১১ এর বাউনিয়াবাঁধ বি ব্লকে চিহ্নিত অস্ত্রধারী মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী মমিন, শাবু, সম্রাট, শামিম, জয়নাল, ইদ্রিস, কালা মোতালেব, কামাল, জাহাঙ্গীর, আল ইসলাম, ভেজাল মামুন, জয়, ইউনুস, রুবেলসহ অজ্ঞাত নামা ১৪/১৫ জন এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফতের ভাই মামুনের কাছে চাঁদা চায়।

এ নিয়ে কথা কাটাকাটি ও তর্কের মধ্যে আধিপত্য প্রদর্শনী পরিণত হয় গোলাগুলিতে। তাতে বাউনিয়াবাঁধ বি ব্লকের ১৭/১৮ বাসার দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি করিডোরে দাঁড়ানো আয়েশা আক্তার গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

নিহত আয়েশার স্বামী মিরাজ পেশায় বাসচালক। তৃতীয় তলায় ১টি রুম নিয়ে ১০ বছর ধরে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন তারা।এ ঘটনায় অভিযুক্ত ও দায়ের করা মামলার আসামিরা পল্লবী থানা এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী মফিজুর রহমান মামুনের (ভারতে অবস্থানরত) অস্ত্রধারী ক্যাডার। তাদের মধ্যে ১ নম্বর আসামি মমিন চাচাতো ভাই এবং রুবেল বোন জামাই। গ্রেপ্তার ১১ আসামি আল ইসলাম ও ৯ নম্বর আসামি জাহাঙ্গীর নেপথ্যে থেকে দখল ও মাদক ব্যবসার আধিপত্যের লড়াই জিইয়ে রেখে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাকছেদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রেপ্তার আল ইসলামের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা রয়েছে। গুলিতে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় তার সম্পৃক্তা পাওয়া গেছে। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, হাইড (নেপথ্যে) থেকে ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ আল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ 

মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অন্যান্য জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

কে এই গ্রেপ্তার আল ইসলাম 

রাজধানীর পল্লবীতে চাঁদাবাজি, মাদক কারবার আর দখল মানেই আল ইসলাম। নিরীহ কারো জমি কেনার তথ্য পেলেই হাজির হতো আল ইসলাম ও তার ভাই জাহাঙ্গীরের লোকজন। নগদ চাঁদাবাজিতে সিদ্ধহস্ত দুই ভাই চাঁদা না পেলে হামলা করতেন, কখনো সাঙ্গপাঙ্গদের দিয়ে মিথ্যে মামলায় করতেন দিনের পর দিন হয়রানি৷ অনেকে জমি ছেড়ে যেতে বাধ্য হতেন।

মাদক কারবারে জড়িত আল ইসলামের বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা, হামলা, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে অন্তত ডজনখানেক মামলা রয়েছে। ৫ আগস্টের পর রাতারাতি ভোল পাল্টে পল্লবীর আতঙ্কের নাম হয়েছেন দুই সহোদর।

সর্বশেষ রাজধানীর পল্লবী থানা দিন বাউনিয়াবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে গৃহবধূ আয়শা নিহত হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সংঘটিত ওই গোলাগুলির ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকেই নেতৃত্ব দেন আল ইসলাম৷

জেইউ/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *