দেশের ক্রিকেটে স্পিনারদের আধিপত্য থাকলেও একজন বিশ্বমানের লেগ স্পিনার যেন রীতিমতো সোনার হরিণ ছিল! ঘরোয়া ক্রিকেটেও লেগির দেখা মিলতো না খুব একটা।
দেশের ক্রিকেটে স্পিনারদের আধিপত্য থাকলেও একজন বিশ্বমানের লেগ স্পিনার যেন রীতিমতো সোনার হরিণ ছিল! ঘরোয়া ক্রিকেটেও লেগির দেখা মিলতো না খুব একটা।
এই সমস্যা সমাধানে অবশ্য বেশ কয়েক বছর আগেই আমিনুল ইসলাম বিপ্লবে আশা দেখেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু সেই আশার পালে হাওয়া দিতে পারেননি তরুণ এই ক্রিকেটার। তবে নিভু নিভু প্রদীপ হয়ে এখনও টিকে আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। স্বপ্ন দেখেন লাল-সবুজ জার্সিটা আরও একবার গায়ে জড়ানোর।
২০১৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এরপর বাংলাদেশের জার্সিতে খেলেছেন আরও ৯টি ম্যাচ। অবশ্য দলে থিতু হতে পারেননি। সর্বশেষ ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছেন। এরপর আর দেশের হয়ে মাঠে নামার সু্যোগ হয়নি এই লেগ স্পিনারের।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ দলের স্পিন কোচের দায়িত্বে রয়েছেন মুশতাক আহমেদ। সম্প্রতি তার সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে বিপ্লবেরও। আশা দেখছেন জাতীয় দলে ফেরার, একইসঙ্গে প্রথম দেখায় বিপ্লবকে অ্যাখা দিয়েছেন ‘ট্যালেন্ট’ হিসেবে। ঢাকা পোস্টকে মুশতাকের সঙ্গে কাটানো সময় নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বিপ্লব।
প্রশ্ন: মুশতাক আহমেদের সঙ্গে কেমন সময় কাটল?
বিপ্লব: স্যার বিকেএসপিতে এসেছিলেন, আমার বোলিং দেখলেন। পরে কিছু টিপস দিলেন, যে জিনিসগুলো করলে ভালো হবে আমার জন্য। আমাকে কিছু বলের টেকনিক শেখালেন। তার কথামতো করে দেখলাম। এরপর জিজ্ঞেস করলেন যে কেমন লাগছে কোন পার্থক্য আছে কি না আগের থেকে। আমি বললাম যে ভালো মনে হচ্ছে। যাওয়ার সময় বলে গেলেন, যেগুলো শিখিয়েছেন সেগুলো যেন আমি নিয়মিত অনুশীলন করি।
প্রশ্ন: বোলিং দেখে আলাদা করে কিছু বলেছেন কি না?
বিপ্লব: মুশতাক স্যার প্রথম যখন আমাকে দেখলেন তখন বলল যে, তুমি যদি এই কাজগুলো করো তাহলে ভালো হবে। এরপর দুই একটা কাজ যখন আমাকে দেখিয়ে দিলেন, আমি যখন করে দেখালাম তখন স্যার বললেন যে তোমার মধ্যে ট্যালেন্ট আছে। তুমি রেগুলার নিয়মিত অনুশীলন করো তোমার বোলিং আরও ভালো হবে। ইনশাআল্লাহ ভালো করতে পারবা।
প্রশ্ন: আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন মনে হচ্ছে?
বিপ্লব: উনি (মুশতাক) অনেক পজিটিভ মানুষ। আত্মবিশ্বাসটা অনেক কাজে লেগেছে সেই সঙ্গে শহীদ মাহমুদ স্যারও ছিল। মূলত তিনিই আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বিকেএসপিতে। আমার কাছে এটা অনেক কনফিডেন্স দিয়েছে, যেটা ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারবো। একটা খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে আরো কিভাবে উন্নতি করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলছেন। যেগুলো বলে দিয়েছেন সেগুলো আসলে অনুসরণ করার কথা বলেছেন আমিও চেষ্টা করছি।
স্যারের সাথে কাজ করার পর আমার নিজের কাছে বেটার ফিল হচ্ছে। মাহমুদ স্যারের সাথে আমি কয়েকদিন কাজ করছি সবকিছুই একই। তো আমার কি করতে হবে, না করতে হবে তারা দুজনই আমাকে সেটা পরিষ্কার করে জানিয়েছেন। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে সাহস যুগিয়েছে তারা আমাকে। আমি যদি আরো কয়েকদিন স্যারদের সাথে কাজ করার সুযোগ পাই তাহলে আমার বোলিংয়ে আরো উন্নতি হবে বলে আমার বিশ্বাস।
প্রশ্ন: জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে কিছু বলেছে?
বিপ্লব: যখন দেখা হয়েছে স্যার তো জানে যে আমি জাতীয় দলে খেলেছি আগে। আমাকে পজিটিভ কথা বলেছে সাহস যুগিয়েছে যেটা আমার ভালো লেগেছে। আমাকে বলেছে আমি যে কোনো সময় কামব্যাক করতে পারি। আমার কোয়ালিটি আছে, আমি যদি আমার বোলিংটা ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারি। তাহলে সেটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে দ্রুত কামব্যাক করতে পারব এরকম কিছু বলেছে।
প্রশ্ন: আপনি নিজে কতটা আত্মবিশ্বাসী দলে ফিরতে?
বিপ্লব: সত্যি কথা বলতে কি অনেকদিন পর এমন কাজ করলাম। আসলে আমার কাছে খুব ভালো লাগছে মাঝখানে মাহমুদ স্যারের সাথে কয়েকদিন কাজ করেছি আমি। কামব্যাক করার বিশ্বাসটা আমিও রাখি আর এই বিশ্বাসটা আরো শক্তভাবে স্যাররা আমাকে যুক্ত করার চেষ্টা করছেন। আমাকে বলছেন যে আমি পারবো চেষ্টা করলে। একটা খেলোয়াড়ের জন্য সবসময় ভালো যখন একজন কোচ খেলোয়ারকে সাহায্য করে বা ভরসা যোগায়। আশা রাখছি আমি যদি কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমি ব্যাক করবো দলে।
এসএইচ/এফআই