জ্ঞান মানুষকে সভ্য করে তোলে, ভালো-মন্দের পার্থক্য ও অন্যের থেকে শ্রেষ্ঠ প্রমানের সুযোগ দেয়। আল্লাহ তায়ালা নিজেও জ্ঞানীদের অন্যদের থেকে আলাদা বলে ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
জ্ঞান মানুষকে সভ্য করে তোলে, ভালো-মন্দের পার্থক্য ও অন্যের থেকে শ্রেষ্ঠ প্রমানের সুযোগ দেয়। আল্লাহ তায়ালা নিজেও জ্ঞানীদের অন্যদের থেকে আলাদা বলে ঘোষণা করেছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ (الزمر: ٩)
অর্থাৎ বল, যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান? (সূরা যুমার, আয়াত : ৯)
আল্লাহ আরও বলেন,
﴿يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ ﴾ (المجادلة: ١١)
অর্থাৎ যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে বহু মর্যাদায় উন্নত করবেন। (সূরা মুজাদালা, আয়াত : ১১)
জ্ঞান অর্জনের ফজিলত সম্পর্কে কাসীর ইবনু কায়স রহ.-এর সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি আবূ দারদা রা.-এর সঙ্গে দামেশকের মসজিদে বসা ছিলাম। তখন তার কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবূ দারদা! আমি একটি হাদিসের জন্য সুদূর মদীনাতুর রাসূল থেকে এসেছি। জানতে পারলাম, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে হাদিস বর্ণনা করেন। এ ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে আমি আসিনি। আবূ দারদা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনের জন্য কোনো পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তার পরিবর্তে তাকে জান্নাতের পথসমূহের মধ্যে কোনো একটি পথে পৌঁছে দেন।
ফিরিশতারা জ্ঞান অন্বেষণকারীর সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। জ্ঞানীর জন্য আসমান ও যমীনে যারা আছে তারা আল্লাহর নিকট ক্ষমা ও দোয়া প্রার্থনা করে, এমন কি পানির গভীরে বসবাসকারী মাছও। আবেদ (সাধারণ ইবাদাতগুজারী) ব্যক্তির উপর আলেমের ফাজিলত হলো যেমন সমস্ত তারকার উপর পূর্ণিমার চাঁদের মর্যাদা। জ্ঞানীরা হলেন নবীদের উত্তরসুরি। নবীগণ কোনো দীনার বা দিরহাম মীরাসরূপে রেখে যান না; তারা উত্তরাধিকার সূত্রে রেখে যান শুধু ইলম। সুতরাং যে ইলম অর্জন করেছে সে পূর্ণ অংশ গ্রহণ করেছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৪১)
স্বাভাবিকভাবে ইসলামে অন্যের প্রতি ঈর্ষা করতে নিষেধ করা হলেও দুই ক্ষেত্রে ঈর্ষা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে ইবনে মাউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,শুধু দু’জন ব্যক্তি ঈর্ষার পাত্র। সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং তাকে তা সৎপথে ব্যয় করার শক্তিও দিয়েছেন। আর সেই লোক যাকে আল্লাহ জ্ঞান-বুদ্ধি দান করেছেন, যার বদৌলতে সে বিচার-ফায়সালা করে থাকে ও তা অপরকে শিক্ষা দেয়। (বুখারি ও মুসলিম)।
রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে কোরআন শিক্ষা করে এবং শিক্ষা দেয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০২৭)
অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনের জন্য কোনো পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জান্নাতের পথ সহজ করে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৯)
আরেক হাদিসে আছে, ‘আল্লাহ তাআলা যাকে প্রভূত কল্যাণ দিতে চান, তাকে দ্বীনের প্রজ্ঞা দান করেন।’ (বুখারি হাদিস : ৭১)