চট্টগ্রামের নিউমার্কেট ও আশপাশে বৈষম্যবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চট্টগ্রামের নিউমার্কেট ও আশপাশে বৈষম্যবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর থেকে নিউমার্কেট এলাকা থেকে আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. মোমিন উল্লাহ ভুইঁয়া জানান, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে অন্তত ৪৫ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জন গুলিবিদ্ধ। গুরুতর আহত দুজন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বেশিরভাগই মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। অনেকের হাতে-পায়েও আঘাত রয়েছে।
আহতরা হলেন– কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মো. আলাউদ্দিন (২৬), নোয়াখালীর কবিরহাটের সোহরাব হোসেন (২২), ফয়সাল (২৫), আশরাফুল (৩০), জাহাঙ্গীর (২৬), সৌরভ (২২), মনির (২২), চিশতী (২৮), তাহমিন (১৯), শান্ত ইসলাম (২২), মাঈনউদ্দিন (২৪), কাওছার হোসেন (২৪), মাহবুব হোসেন (২৪), মো. মারফ (২৭), এহসান উল্যাহ (২৮), শাহীন (২৪), মো. শাহীন (২৬), শাকিব উদ্দিন (২০), আদিল (২৫), রিদোয়ান (২৪), সাকিব উদ্দিন (২৩), ফারুক (২০), কাঞ্চন চক্রবর্তী (৪৭) ও মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৮)।
এছাড়াও চমেকে আহত অবস্থায় এসেছেন সীতাকুণ্ড থেকে ফারহান (২৩), শুকুর (২০), অনিক (২৫), আবু তাহের (২৭), সুজন (৩৫), সাজ্জাদুল হক (২৭), জয়নাল আবেদিন (৩০), মো. কালাম উদ্দিন (২৭), রিমন (২২), নয়ন (৩২), রিমন (২২), নয়ন (৩২), বাবু (২০), মো. হাসান (১৯), মো. আসিফ (১৭), তাহমিদুল ইসলাম (২৩), আরিফ আহমেদ (৩৩), তপু (২৬), মো. কফিল (২৫), রবিউল আউয়াল (২৯), বাদশা (২৪), সাইফুল (৩৫), মো. ইমরান (১৯), পটিয়ায় আহত সাহেদ (২৩), মিন্টু চৌধুরী (৩৮), সুমন বিশ্বাস (২৬) ও মো. হাসান (২০)।
এর আগে সকাল ১০টার পর থেকে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হলেও নিউমার্কেটের আশপাশে ছিল না পুলিশ। এসময় তারা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ওই সময় ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার পর পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল ছোড়ে। তখন বিক্ষোভকারীরা নিউমার্কেট চত্বর থেকে আশপাশে ছোটাছুটি করতে থাকেন।
এর মিনিট দশেক পর শিক্ষার্থীরা আবারও নিউমার্কেট চত্বরে জড়ো হয় এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তখন ফের পুলিশ টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এসময় বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ করতে যোগ দেয় সরকার দলীয় নেতাকর্মীরাও। এসময় কয়েক রাউন্ড গুলির আওয়াজও শোনা গেছে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা নিউমার্কেট সড়ক ছেড়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়। এরপরই সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা নিউমার্কেট চত্বরে অবস্থান নেন। তখন পুলিশ সেখান থেকে সরে যায়।
বর্তমানে নিউমার্কেট, রাইফেল ক্লাব, স্টেশন রোড এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংঘর্ষের পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া আন্দোলনকারীদের একটি অংশ লালদিঘীতে জমায়েত হয়েছে। আরেকটি অংশ টাইগারপাস-স্টেশন রোড হয়ে ওয়াসামুখী সড়কে অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, যেকোনো সংঘাত এড়ানোর জন্য নগর পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় কোনো হুমকি দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
আরএমএন/এসএসএইচ