ইমরান বাদ পড়তেই জানা গেল বিস্ফোরক তথ্য!

ইমরান বাদ পড়তেই জানা গেল বিস্ফোরক তথ্য!

স্তাদে দ্য ফ্রান্সে চলছে পোল ভোল্ট, হার্ডেলসের মতো নানা আকর্ষণীয় ইভেন্ট। কিন্তু ১০০ মিটার স্প্রিন্টের হিট শেষ হতেই বাংলাদেশের সাংবাদিকরা ছুটলেন মিক্সড জোনের দিকে। এর আগেই বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান হিটেই বিদায় নিয়েছেন। তার অলিম্পিক অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্সের প্রতিক্রিয়া জানতে মিক্সড জোনে ছোটেন সাংবাদিকরা।

স্তাদে দ্য ফ্রান্সে চলছে পোল ভোল্ট, হার্ডেলসের মতো নানা আকর্ষণীয় ইভেন্ট। কিন্তু ১০০ মিটার স্প্রিন্টের হিট শেষ হতেই বাংলাদেশের সাংবাদিকরা ছুটলেন মিক্সড জোনের দিকে। এর আগেই বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান হিটেই বিদায় নিয়েছেন। তার অলিম্পিক অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্সের প্রতিক্রিয়া জানতে মিক্সড জোনে ছোটেন সাংবাদিকরা।

প্যারিস অলিম্পিকে স্তাদে দ্য ফ্রান্সে প্রথম কয়েক মিটার ভালোই শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের এই দ্রুততম মানব। সময়ের ব্যবধানে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ে ১০.৭৩ সেকেন্ড টাইমিংয়ে আট জনের মধ্যে ষষ্ঠ হন। অথচ ইমরানের হিটে তার ব্যক্তিগত টাইমিংই ছিল সবচেয়ে ভালো (১০.১১ সেকেন্ড)। তাই মূল হিটে যাওয়ার প্রত্যাশা ছিল তার। ভালো শুরু করে পিছিয়ে পড়া এবং তার সেরা টাইমিংয়ের চেয়ে এত খারাপের কারণ জানতে চাইলে তিনি অফ দ্য রেকর্ড কিছু কথা বলতে চান। পেশাগত নৈতিকতার কারণে সাংবাদিকরা রেকর্ডার অফ করেন। এরপর তিনি যা বললেন তা রীতিমতো জাতি ও ক্রীড়াপ্রেমীদের সঙ্গে প্রতারণা। তাই সাংবাদিকরা ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থেই বাধ্য হয়ে বিষয়টি নিয়ে সামনে আগান।

বাংলাদেশের দ্রুততম মানব অলিম্পিক খেলার জন্য ফিট ছিলেন না। গত কয়েক মাস তিনি পূর্ণাঙ্গ অনুশীলনও করতে পারেননি। তার কোচও নাকি তাকে খেলতে বারণ করেছিলেন। পেটের নিচের অংশে সমস্যা রয়েছে। হার্নিয়ার একটি অপারেশনও করা প্রয়োজন। 

আজ (শনিবার) অলিম্পিক অংশগ্রহণ শেষে এমন তথ্য জানা গেছে। অথচ গত কয়েক মাস ধরেই ফেডারেশন ও ইমরান দুই পক্ষই অলিম্পিকে সেরা টাইমিং ও ভালো কিছুর প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আসছিলেন। তাই আজ মিক্সড জোনে সাংবাদিকরা রীতিমতো হতভম্ব।

বাংলাদেশের ক্রীড়া কর্মকর্তাদের তথ্য গোপন ও অসত্য প্রকাশ, দেশীয় ক্রীড়াবিদদের ইনজুরি এবং রেকর্ড নিয়ে তথ্য বিভ্রাটের সঙ্গে সাংবাদিকরা অনেকটাই অভ্যস্ত। ইমরান ইংল্যান্ডে বেড়ে উঠেছেন। গত তিন বছরে বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্সের আলোকবর্তিকা তার হাতেই। তাই ইমরানের মতো ক্রীড়াবিদের কাছে এটা প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। তাই সাংবাদিকরা আরও খটকায়। তার নৈতিকতা এবং সততা নিয়েও প্রশ্ন হয়েছে মিক্সড জোনে। তখন শোনা গেল, তিনি নাকি ফেডারেশনকেও জানিয়েছেন এবং ফেডারেশনের শেখানো বুলিই তিনি আওড়িয়েছেন। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় দুই পক্ষের মন্তব্যই তুলে ধরা দায়িত্ব। তাই ফেডারেশনের ভাষ্যও জানা প্রয়োজন সাংবাদিকদের।

মিক্সড জোন থেকে সাংবাদিকরা দ্বিধা কাটাতে শরণাপন্ন হলেন ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টুর। তিনি স্টেডিয়ামে পাশের গেটেই ছিলেন। সেখানে গিয়ে সাংবাদিকরা আরও চমকে যান। অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টু ও অলিম্পিকে বাংলাদেশের শেফ দ্য মিশন ইন্তেখাবুল হামিদ অপু দুই জনই উপস্থিত সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘কিছুক্ষণ পর পরের রাউন্ডের খেলা সবাই বাইরে কেন?’ হিটে ইমরান ৪৫ জনের মধ্যে ২৫তম হয়ে বিদায় নিয়েছেন। প্রতি হিটে প্রথম দুই জন ও ছয় হিট মিলিয়ে সেরা চার টাইমিংধারী প্রথম রাউন্ডে খেলবেন। ইমরান তার হিটে ষষ্ঠ হয়েছেন, এটাকেই কর্মকর্তারা পরের চার জন ধরে পরের রাউন্ডে ভেবেছেন। সাংবাদিকরা ইমরানের সঙ্গে কথা বলেই এসেছেন বাইরে এবং সুনিশ্চিত যে ইমরান পরের রাউন্ডে নেই। তখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের বাদানুবাদ ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।

কয়েক মিনিট পর পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হলে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টুকে ইমরানের বিষয় জিজ্ঞাসা করা হয়। ইমরানের অসুস্থতা, আনফিট, খেলতে না চাওয়া– এসব বিষয় উড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সে অসুস্থ বা আনফিট হলে তাকে আমরা পাঠিয়েছি কেন? আনফিট হলে অন্য কাউকে পাঠাতাম। এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই, সে আমাদের জানায়নি। আপনাদের কি বলেছে এটা আমি জানি না।’

দুই রকম মন্তব্যে একটা দ্বান্দ্বিক অবস্থা তৈরি হয়েছে। অলিম্পিকের মতো আসরে এসে অন্য দেশ যখন পদক ও রেকর্ড নিয়ে হিসাব করে, তখন বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অলিম্পিকে এসেও পাল্টাপাল্টি বক্তব্য নিয়ে খবর লিখতে হয়। যা দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য চরম হতাশার!

এজেড/এএইচএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *